আলমডাঙ্গায় পরকীয়ার জেরে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে পিটিয়ে মারল স্বামী
আলমডাঙ্গা উপজেলায় পারিবারিক কলহের জের ধরে ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে মারপিটে হত্যার পর মুখে বিষ দিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। পরিবারের দাবি, মারপিট করে হত্যার পর তাঁর মুখে বিষ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কালিদাসপুর ইউনিয়নের আসাননগর পশ্চিমপাড়ায় এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত স্বামী ও তার বাবা-মা পলাতক রয়েছেন।
নিহত পলি খাতুন (২৫) উপজেলার হারদি ইউনিয়নের গোপালদিয়াড় গ্রামের ফরিদ আলীর মেয়ে।
এছাড়া অভিযুক্ত স্বামী রবিউল ইসলাম একই উপজেলার কালিদাসপুর ইউনিয়নের আসাননগর পশ্চিমপাড়ার গিয়াস উদ্দীনের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, গত কয়েক মাস ধরে পারিবারিক কোলাহলের জের ধরে মঙ্গলবার বিকেলে স্ত্রী পলি খাতুনকে ঘরে আটকে মারপিট করে তাঁকে হত্যা করে স্বামী রবিউল ইসলাম। হত্যাকাণ্ড ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে স্ত্রীর লাশ ঘরের মেঝেতে রেখে মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে রবিউল চিৎকার করতে থাকেন।
পরে রবিউল তাঁর শ্বশুরবাড়িতেও পলি বিষপানে আত্মহত্যার খবর জানান। শ্বশুর পরিবারের লোকজন বাড়িতে আসলে তোপের মুখে লাশ ফেলে বাড়ি থেকে অভিযুক্ত স্বামী রবিউল ইসলাম তাঁর বাবা গিয়াস উদ্দীন ও মা পারুলা খাতুন পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে আলমডাঙ্গা থানার পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রাত ১০ টার দিকে পলি খাতুনের উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। এ ঘটনায় পলি খাতুনের বাবা ফরিদ আলী বাদী হয়ে রবিউলের বিরুদ্ধে আলমডাঙ্গা থানায় হত্যা মামলা দায়ের প্রস্তুতি নেন।
নিহত পলির পিতা গিয়াস উদ্দীন অভিযোগ করে বলেন, জামাই রবিউল এক প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে পরকীয়া থাকায় প্রতিবাদ করায় মেয়ের উপর বিভিন্ন সময় নির্যাতন করতো। মঙ্গলবার বিকেলে আমার মেয়েকে মারপিট করায় সে আমার বাড়িতে আসতে ছিল। গ্রামের মধ্য থেকে তাকে ফেরৎ নিয়ে মারপিট করে হত্যা করে। তিনি আরও বলেন, পলির লাশ ভিন্ন খাতে নিতে তাঁর মুখে বিষ দেওয়া হয়। তাদের দাম্পত্য জিবনে ৭ মাসের মেয়ে ও ২ বছরে ছেলে সন্তান রয়েছে। পলি ৬ মাসে অন্তঃসত্ত্বা ছিলও বলে তিনি জানান।
আলমডাঙ্গা থানার পরিদর্শক (ওসি) মাসুদুর রহমান জানান, পলির আত্মহত্যার বিষয়টি অস্পষ্ট। লাশের সুরতহাল করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। লাশের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসলে হত্যা নাকি আত্নহত্যা তার সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে।