৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আলমডাঙ্গায় বিসিআইসি ডিলার 'জোয়ার্দ্দার ট্রেডার্স' এর বিরুদ্ধে সার চোরাচালানের অভিযোগ

প্রতিনিধি :
প্রেসক্লাব ডেক্স
আপডেট :
নভেম্বর ৩০, ২০২৪
25
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
ছবি :  

আলমডাঙ্গা উপজেলার বাড়াদী ইউনিয়নের মেসার্স জোয়ার্দ্দার ট্রেডার্সের মালিক আনিছুর রহমান জোয়ার্দ্দার এবং তার ছেলে সাদ্দাম জোয়ার্দ্দারসহ কয়েকজন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে সরকার নির্ধারিত মূল্যে সার বিক্রি না করা এবং অবৈধভাবে সার চোরাচালানের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় কৃষকরা এই অভিযোগের কারণে আগামীতে সার সংকটের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

জানা গেছে, পার্শ্ববর্তী জেলা মেহেরপুর, ঝিনাইদহ এবং কুষ্টিয়াতে সার সংকট দেখা দিয়েছে। বেশি লাভের আশায় এই তিন জেলায় সার পাচার করা হচ্ছে, এবং আলমডাঙ্গা সহ চুয়াডাঙ্গার অন্যান্য উপজেলা সার পাচারের জন্য প্রধান রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। স্থানীয় ডিলাররাও এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সার পাচার করছেন।

সম্প্রতি, আলমডাঙ্গার পোলতাডাঙ্গা ও হাটবোয়ালিয়া এলাকায় স্থানীয় জনতার সহযোগিতায় ৮০ বস্তা এমওপি এবং ৪০ বস্তা ডিএপি সার জব্দ করা হয়েছে। এই সময় তিনটি লাটাহাম্বার গাড়ির চালককে আটক করা হলেও পরে তাদের মুচলেকায় ছেড়ে দেওয়া হয়।

জানা যায়, গত ২৫ নভেম্বর সকালে দুটি ইঞ্জিনচালিত লাটাহাম্বার গাড়ি আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়িয়া বাজারস্থ কীটনাশক ব্যবসায়ী মেসার্স মারিফুল ট্রেডার্সের মালিক মারিফুল ইসলামকে নিয়ে কুষ্টিয়ায় ৮০ বস্তা এমওপি সার পাচার করছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পোলতাডাঙ্গা ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা এবিএম মোমিনুর রসিদ গাড়ি দুটি আটক করেন এবং সার জব্দ করেন। পরবর্তীতে জানা যায়, এই সার আলমডাঙ্গা উপজেলার বাড়াদী ইউনিয়নের সরকারি সার ডিলার আনিছুর রহমান জোয়ার্দ্দারের মালিকানাধীন।

এছাড়া, গত বৃহস্পতিবার সকালে দামুড়হুদা উপজেলার এক কীটনাশক ব্যবসায়ী একই ইউনিয়নের হাটবোয়ালিয়া গ্রামের মধ্যদিয়ে মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলায় ৪০ বস্তা ডিএপি সার পাচার করছিলেন, যখন ব্লক সুপারভাইজার খাদেমুল বাশার লাটাহাম্বাসহ সার জব্দ করেন। এই সার পরে আলমডাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিসে রাখা হয়।

কৃষকদের অভিযোগ, উপজেলার অধিকাংশ কীটনাশক ডিলার সরকারিভাবে নির্ধারিত দামে সার বিক্রি না করে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বেশি দামে সার বিক্রি করছেন। সরেজমিনেও এই অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। বাড়াদী ইউনিয়নের গোপালনগর গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন জানান, তারা সরকার নির্ধারিত মূল্যে সার পাচ্ছেন না এবং বেশি দামে সার কিনতে বাধ্য হচ্ছেন, অথচ কোনো রসিদ দেওয়া হয় না।

এ বিষয়ে বাড়াদী ইউনিয়নের ব্লক সুপারভাইজার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিএম মোমিনুর রহমান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পোলতাডাঙ্গা বাজার থেকে ৮০ বস্তা এমওপি সার জব্দ করা হয়েছে এবং উপজেলা কর্মকর্তাদের সাথে পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করা হবে।

উপজেলা কৃষি অফিসার রেহানা পারভিন জানান, "বর্তমানে সার চোরাকারবারিরা আলমডাঙ্গা রুট ব্যবহার করছে। পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোর সার সংকট মোকাবেলায় কিছু অসাধু ডিলার সরকার নির্ধারিত মূল্যের তুলনায় বেশি দামে সার বিক্রি করছে। আমরা সার চোরাচালানকারীদের বিরুদ্ধে তৎপর রয়েছি এবং ইতোমধ্যে ১২০ বস্তা সার জব্দ করা হয়েছে।"

তিনি আরও জানান, "বাড়াদী ইউনিয়নের ডিলার আনিছুর রহমান জোয়ার্দ্দারের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সার পাচার করার অভিযোগ রয়েছে এবং ইতোমধ্যেই তার ৮০ বস্তা সার জব্দ করা হয়েছে। তাকে পূর্বে সতর্ক করা হয়েছিল, তবে এবার তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।"
তথ্য সুত্র: দৈনিক সময়ের সমীকরণ।

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram