আলমডাঙ্গায় পূজা দেখতে গিয়ে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু
আলমডাঙ্গায় পূজামণ্ডপে যাওয়ার পর নিখোঁজ হওয়া দুই শিশুর মরদেহ মাথাভাঙ্গা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত শিশুরা হলো আঠারোখাদা গ্রামের নতুন মসজিদপাড়ার সাইফুল ইসলামের ছেলে সামিউল্লাহ তাসিফ (৮) এবং হুমায়ুন কবীরের ছেলে মো. হুজাইফা (১০)। গতকাল শুক্রবার দুপুরের পর এই দুটি শিশু বাড়ির পাশের একটি পূজামণ্ডপে পূজা দেখতে যায়।
তাসিফ ও হুজাইফা দুপুরে পূজামণ্ডপে যাওয়ার পর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও তারা বাড়ি না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা সন্ধ্যার দিকে তাদের খোঁজখবর শুরু করে। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও যখন কোনো সন্ধান মেলে না, তখন পরিবারের লোকজনের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দেয়। এর কিছুক্ষণ পর স্থানীয় গ্রামবাসী ও স্বজনেরা বাড়ির কাছের মাথাভাঙ্গা নদীর পাশে যায়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তারা সেতুর কাছে নদীর পূর্ব তীরে একটি স্যান্ডেল ও জামা পড়ে থাকতে দেখতে পায়। এতে সন্দেহ হলে দ্রুত তারা পুলিশে খবর দেয়।
পুলিশ ও গ্রামবাসীর সহযোগিতায় নদীতে তল্লাশি শুরু হয়। রাত ১১টার দিকে মাছ ধরার জাল দিয়ে নদী থেকে দুটি শিশুর নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। পরিবারের সদস্য ও গ্রামবাসী তাদের মরদেহ শনাক্ত করে। শিশুদের এভাবে মৃত্যুতে পুরো গ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে।
আলমডাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) চায়না খাতুন জানান, দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। তবে শিশুদের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত আবেদন করা হয়েছে যাতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ দাফন করা যায়। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই আজ সকালে তাদের দাফনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
এ ঘটনার পর থেকে গ্রামবাসীদের মধ্যে শোকের পাশাপাশি উদ্বেগও বিরাজ করছে। অনেকেই বলছেন, শিশুদের কীভাবে এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। কোনোভাবে তারা পানিতে পড়ে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছিল, নাকি এর পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে, তা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে আলোচনা চলছে।
এদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে এটি পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা বলে মনে হচ্ছে। তবে সঠিক কারণ নিশ্চিত হতে তদন্ত চলছে।