আলমডাঙ্গা রায়সার শিশু ফাহিম হত্যা মামলায় আপন চাচি গ্রেফতার
আলমডাঙ্গার রায়সা গ্রামে সাড়ে ৪ বছরের শিশু ফাহিম মালিথার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার আপন চাচি নাজমা খাতুনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রায় দুই মাস পর ময়নাতদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে এই হত্যা মামলায় গ্রেফতার হন নাজমা।
জানা যায়, গত ৯ নভেম্বর দিবাগত রাতে পুলিশ রায়সা গ্রামের লিটন মালিথার স্ত্রী নাজমা খাতুনকে গ্রেফতার করে এবং পরদিন ১০ নভেম্বর সংশ্লিষ্ট মামলায় আদালতে পাঠানো হয়।
ফাহিম মালিথা হত্যা মামলার ময়নাতদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে গত ৭ নভেম্বর আলমডাঙ্গা থানার এসআই দেবাশিষ মহলদার হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনায় জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার রায়সা গ্রামের আব্দুল করিমের একমাত্র সন্তান ছিল ফাহিম। ১৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে খেলতে বের হওয়ার পর ফাহিম আর বাড়ি ফিরে আসেনি। সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি পুকুরের পানিতে খুলনা থেকে ডুবুরি টিমও এসে গভীর রাত পর্যন্ত খোঁজাখুঁজি করে, তবে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। পরদিন ১৬ সেপ্টেম্বর, বাড়ির কাছের বাঁশবাগানের এক গর্ত থেকে ফাহিমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মৃতদেহের অবস্থান, বিশেষত বাঁশবাগানের ঐপারের গর্তে ফাহিমের উপস্থিতি ছিল অস্বাভাবিক। এ ছাড়া, ফাহিমের মুঠির মধ্যে মেয়েদের মাথার লম্বা চুলও পাওয়া যায়, যা এই হত্যাকাণ্ডের সন্দেহ বাড়ায়। আরও গুরুতর বিষয়, ফাহিমের চাচি নাজমা খাতুন তার বাবা আব্দুল করিমকে হুমকি দিয়েছিল চরম ক্ষতির, যা হত্যাকাণ্ডের সাথে তার সংশ্লিষ্টতার ইঙ্গিত দেয়।
প্রাথমিকভাবে ওই দিনই ফাহিমের বাবা বাদী হয়ে থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। প্রায় দুই মাস পর ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে আসলে, তা শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার আলামত নিশ্চিত করে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মেহেবুবা মুস্তারী ওই রিপোর্ট প্রদান করেন।
এ রিপোর্টের ভিত্তিতে পুলিশ হত্যা মামলা রুজু করে এবং প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে নাজমা খাতুনকে গ্রেফতার করে।
এদিকে, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ ও শোক বিরাজ করছে, এবং গ্রেফতারকৃত নাজমা খাতুনের বিরুদ্ধে আরও তদন্ত চলছে।