৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গায় আলোচিত মুন্নি হত্যার রহস্য উন্মোচন: ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা, দুই যুবক গ্রেফতার

প্রতিনিধি :
প্রেসক্লাব ডেক্স
আপডেট :
নভেম্বর ১৬, ২০২৪
41
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
ছবি :  

চুয়াডাঙ্গা শহরের আলোচিত মুন্নি হত্যার ঘটনায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে। মামলার প্রধান আসামি মানিক আলী মুন্সি (২২) এবং তার চাচাতো ভাই পারভেজ মহসিন স্বপন (১৯) হত্যাকাণ্ডে তাদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

গত শুক্রবার সন্ধ্যায়, জেলা গোয়েন্দা পুলিশ দুই আসামিকে আদালতে হাজির করে এবং পরে তাদের চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। গ্রেফতারকৃত মানিক আলী মুন্সি চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হাজরাহাটি শেখপাড়ার টোকন আলী মুন্সির ছেলে এবং পারভেজ মহসিন স্বপন একই এলাকার মইদুল ইসলামের ছেলে।

ঘটনার বিস্তারিত:

৯ নভেম্বর দুপুরে খালেদা আক্তার মুন্নি তার মা মাকে জানায়, হাটবোয়ালিয়া বাজারে মার্কেট যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হচ্ছে। একই দিন সন্ধ্যায়, তার মায়ের সাথে মোবাইলে কথা হয়, তখন মুন্নি জানায়, সে রাতে বাড়ি ফিরবে না। এরপর থেকেই তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে, ১৪ নভেম্বর সকালে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মমিনপুর ইউনিয়নের বোয়ালমারী গ্রামে একটি মেহগনি বাগানের ভেতরে এক নারীর অর্ধগলিত লাশ পাওয়া যায়। স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়, এবং পুলিশ সিআইডির সহায়তায় ঘটনাস্থল থেকে ভ্যানিটি ব্যাগ, মোবাইল নম্বর ও স্বর্ণের দোকানের ক্যাশ ভাউচার উদ্ধার করে।

তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে পুলিশ হত্যাকারীদের শনাক্ত করে এবং ১৫ নভেম্বর ভোরে অভিযুক্ত দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে, তারা হত্যাকাণ্ডের সাথে নিজেদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে।

স্বীকারোক্তি:

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে, মানিক আলী মুন্সি এবং পারভেজ মহসিন স্বপন হত্যার ঘটনা বর্ণনা করেন। তাদের মতে, তারা মুন্নিকে চুয়াডাঙ্গা বোয়ালমারী গ্রামের চরের মাঠে নিয়ে গিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করে। পরে, মুন্নি চুক্তির টাকা দাবি করলে তারা তা দিতে অস্বীকার করে। এর পর, তারা ক্ষিপ্ত হয়ে মুন্নিকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। হত্যার পর, মানিক আলী মুন্সি মুন্নির পায়ের নুপুর, আংটি ও নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।

এই ঘটনায়, মুন্নির মা আহারণ নেছা বাদী হয়ে ১৪ নভেম্বর চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

অতিরিক্ত তথ্য:

মুন্নি আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়িয়া গ্রামের খোওয়াজ আলীর ছোট মেয়ে। তিনি বিয়ের পর ছয় মাসে ডিভোর্স নেন এবং তারপর থেকে মায়ের সাথে বসবাস করছিলেন। ৯ নভেম্বর, মার্কেটে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর, তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। ছয় দিন পর তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার হয়। ময়নাতদন্ত শেষে মুন্নির মরদেহ রাতে তার গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়।

আদালত এবং পরবর্তী পদক্ষেপ:

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা আদালতে হাজির করা হলে, বিচারক তাদের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি গ্রহণ করেন এবং দুজনকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।

মন্তব্য করুন

সর্বশেষ খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram